নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ
ডাক্তার মানেই অসুস্থ অসহায় মানুষের আস্থার প্রতীক। অনেক মানবিক হৃদয়বান ডাক্তার রয়েছেন আমাদের দেশে। যখন কোনো গরিব অসহায় রোগী এসে বলেন- অমুক ডাক্তার সাহেব খুব যত্ন করে দেখেছেন, ফ্রি ওষুধ দিয়েছেন, আবার সমস্যা হলে ফোন করে জানাতে বলেছেন। তখন আপনা থেকেই তাঁর বা তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জাগ্রত হয় হৃদয়ের গভীরে। এমনই একজন মানবিক ডাক্তার দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাকসুদা আক্তার রিমি।
তিনি সপ্তাহের প্রত্যেক বৃহস্পতিবারে বিনা পারিশ্রমিকে অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষদের
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
শুধু তাই না তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সবসময়
ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
রিমির মা একজন গৃহিণী তার স্বপ্ন ছিল মেয়ে ডাক্তার হয়ে গরিব মানুষদের ফ্রি চিকিৎসা দিবেন তাঁর সাফল্যের হার ৯৬% মানবসেবার মহান ব্রত থেকেই চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন এবং পেছনে ছিল মুক্তিযুদ্ধা পিতার অনুপ্রেরণা। সেই পথ ধরে নিজের পেশাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন মানুষের কল্যাণে। তিনি মনে করেন অর্থ উপার্জন করাই সফলতা নয়, বরং একজন অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে তুলতে পারলেই আসল স্বার্থকতা। ছাত্রজীবন থেকেই ভীষণ মেধাবী ছিলেন ডা. মাকসুদ আক্তার রিমি।
তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে
এমবিবিএস পাস করে ৩৯ তম বিসিএসে
সুপারিশ প্রাপ্ত হয়ে প্রথম যোগদান করেন
সুনামগঞ্জ জেলার হাসান ফাতেমাপুর ইউনিয়ন সাব সেন্টারে মেডিকেল অফিসার হিসেবে সেখানে সুনাম এবং সাফল্যের সাথে দু’বছর চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পর ২০২২ সালে নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার
হিসেবে যোগদান করেন। ডাক্তার রিমি নিজ জেলাই এসেই শুরু করেন এই মানবিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। ডা. মাকসুদা আক্তার রিমির বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাম হাজী মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন ফকির তিনি পেশায় একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তিনি সৎ ও নিষ্ঠার সাথে তার কর্মজীবন অতিবাহিত করেন যার সুনাম এখনো মানুষের মুখে মুখে।
চিকিৎসা নিতে আসা সবুজ মিয়া বলেন আমার বাচ্চার অনেক সমস্যা ছিল আপার চিকিৎসা নিয়ে এখন আমার ছেলে অনেকটা ভালো আছে আবার দেখা করতে এসেছি, আমরা গরীব শুনে তিনি কোন ফি নেন নি, ওনার কথা আচার ব্যবহার খুব ভাল। উনাকে আমরা দুর্গাপুরবাসী আশীর্বাদ হিসেবে পেয়েছি, আল্লাহর কাছে দোয়া করি উনি যাতে সুস্থ থাকে
এবং আমাদের গরিবদের সেবা করতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক্তার মাকসুদা আক্তার রিমি বলেন, আমি দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমার অফিস টাইম শেষ করে যতটুকু সময় পাই আমার চেম্বারে
অনেক সময় রোগী দেখে থাকি আর এর মাঝে
সপ্তাহের প্রত্যেক বৃহস্পতিবার আমি ভিজিট ছাড়াই রোগী দেখি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সপ্তাহের সাত দিনেই বিনা ভিজিটে সেবা দিয়ে থাকি কারন আমার বাবা ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার উদ্দেশ্য অসহায় মানুষের
সঠিক সেবা দান করা এবং টাকা পয়সাই
জীবনের সবকিছু না মানুষের ভালোবাসা আর দোয়া পাওয়ার জন্যই আমার এই উদ্যোগ।
Leave a Reply