চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে রাস্তা সংস্কারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রাস্তা নির্মাণের নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার কানসাট গুজরঘাট ব্রীজ থেকে শ্যামপুর চামা বাজার ২৩’শ ২০ মিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ করাচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। রাস্তা সংস্কারের কাজটি করছেন মেসার্স নয়ন এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে, সঠিক নিয়মের রাস্তা সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি ঠিদাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক আলহাজ্ব তৌফিকুল ইসলাম।
স্থানীয় ও পথচারীরা অভিযোগ করেন রাস্তায় যে খোঁয়া ব্যবহার করছে তা নিম্নমানের ও নাম্বারবিহীন ইট। এমনকি মাটিযুক্ত বালি। রাস্তার কাজ তদারকিতে শিবগঞ্জ উপজেলার এলজিডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
তাঁরা জানান, এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অনিয়মের অভিযোগের পরও কাজ বন্ধ না করে এখনও অনিয়মের মাধ্যমে কাজ করেই যাচ্ছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছু দিনের মধ্যেই রাস্তাটি আবারো ভেঙে যাবে। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। ফলে সরকারি বরাদ্দে অবমূল্যায়নের ফলে জনদুর্ভোগের শিকার হবে এলাকাবাসীসহ পথচারীরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হচ্ছে। বালির পরিবর্তে কাদামাটি দিয়ে ও নিম্নমানের ইট, পুরোনো ইটের খোঁয়া ব্যবহার করছে।
স্থানীয় আব্দুল ওদুদ বলেন, ঠিাকাদারকে টেন্ডারের চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার কথা বললেও কোনো তোয়াক্কা না করে অনুমোদন বিহীন নিম্নমানের বালি ও কংক্রিট দিয়ে কাজ সম্পূর্ণ করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
হেমবাবু বলেন, ঠিকাদারকে কি টাকা কম দিয়েছে সরকার? যে এভাবে রাস্তা করবে এতো নিম্নমানের। রাস্তা কয়েকদিনে উঠে যাবে। আমরা চাই শিডিউল অনুযায়ী যে মানের ইট-বালি দিয়ে রাস্তা করার কথা আছে, সেই রকম ভাবে করা হোক ।
স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার পালিয়ে যাওয়ার পরে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ এতো অনিয়ম বরদাস্ত করা যায় না, এ রাস্তাটি সংস্কারে ব্যাপক ও নিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। বালির বদলে মাটি দিয়ে খোঁয়া মিস করা হচ্ছে। এভাবে রাস্তা সংস্কর করলে অল্প দিনে রাস্তা দিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে।
স্থানীয় রেজাউল করিম বলেন, এ রাস্তাটি ভেঙে গেছিল কিন্তু সংস্কার দেখে অনেক খুশি হয়ে ছিলাম, কিন্তু এতো অনিয়ম-দুর্নীতি ও নিম্নমানের রাস্তা নির্মাণ করায় মনটা খারাপ হয়ে গেছে। ৩নং ইটের খোঁয়া দিয়ে রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে একটি দুঃখজনক। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব তৌফিকুল ইসলামের কাছে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, রাস্তার কাজ হচ্ছে। ইট বালি কিছুই নিম্নমানের নয়। বালির বদলে মাটি দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
শিবগঞ্জ উপজেলা এলজিডি’র প্রকৌশলী ছাবের আলী বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়ম পেলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামান আল ইমরান বলেন, সড়কে কাজে অনিয়ম হচ্ছে এমন কোনো অভিযোগ এলাকাবাসী আমাকে জানায়নি। অনিয়ম হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
Leave a Reply