গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘এই দেশে যে ভয়ের রাজত্ব তৈরি হয়েছিল, আবু সাঈদ তার সৎ সাহস দিয়ে তা ভেঙে দিয়েছেন। লাখো কোটি তরুণের রক্তে আগুন লাগিয়েছেন। তাদের মধ্যে এমন এক ঐক্য তৈরি করে দিয়েছেন, যার ফলে এই ভয়ংকর শাসন, হত্যাযজ্ঞ ও গণহত্যা মোকাবিলা করে ছাত্র, তরুণেরা বিজয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছেন।’
বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকালে রংপুরের পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে গাড়িবহরে করে আবু সাঈদের গ্রামের বাড়িতে যান জোনায়েদ সাকি। সেখানে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে নিহতের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
বাংলাদেশের মানুষ আবু সাঈদের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘রক্ত দিয়ে আবু সাঈদ ১৮ কোটি মানুষের জীবন মুক্ত করে দিয়ে গেছেন। আমরা কথা দিচ্ছি, বাংলাদেশে আবু সাঈদ যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন, এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত আমরা প্রত্যেকে জীবন বাজি রাখবো।’
এ সময় ছেলের হত্যাকারী পুলিশ ও নির্দেশদাতাদের বিচার দাবি করেন আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে কারাগারে যাওয়া সব শিক্ষার্থীকে কারাগার থেকে মুক্ত করায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সন্তুষ্টির কথা জানান তিনি।
আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী জানান, তারা সাত ভাইয়ের মধ্যে আবু সাঈদ ছিলেন মেধাবী। তারা কষ্ট করে আবু সাঈদকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনে তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘাতকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন তিনি।
সাঈদের আরেক ভাই আবু হোসেন বলেন, আন্দোলনে শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রদের নির্বিচার গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাই তার বিচার করতে হবে। এ সময় জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে সব খুনির বিচার হবে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। গত ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২২ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
Leave a Reply