May 2, 2024, 2:30 pm

অপারেশনাল কাজে গেলে টোল দিতে হবে না জরুরি যানবাহনকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:
  • Update Time : শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
  • 21 Time View
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের অভ্যন্তরে ‘অপারেশনাল’ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত পুলিশ, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি যানবাহনগুলোকে এখন থেকে আর টোল দিতে হবে না। এ প্রসঙ্গে সরকারের সিদ্ধান্তের পর বিষয়টি টানেল পরিচালনা কমিটির গত বুধবারের সভায় সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের টোল ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থার মোট ৫৬টি গাড়ি টোল ফ্রি রয়েছে। এসব গাড়ি টানেল পার হলে ফি দিতে হয় না। এর মধ্যে তিনটি আছে পুলিশের গাড়ি। সেগুলোর একটি আনোয়ারা থানার, একটি কর্ণফুলী থানার এবং অপটি পতেঙ্গা থানার।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন টানেলের ভেতর দুর্ঘটনাসহ যেকোনও অপারেশনাল কাজে গেলেও পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, নৌ বাহিনীর গাড়িগুলোকে টোল দিতে হতো। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে, টানেলের ভেতর দুর্ঘটনাজনিত কোনও অপারেশনাল কাজে জরুরি সেবা সংস্থার গাড়িগুলো প্রবেশ করলে টোল দিতে হবে না। তবে টানেলের ভেতর অপারেশনাল কাজ ব্যতীত নিজেদের প্রয়োজনে টানেল পার হতে হলে টোল দিতে হবে।’

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এখন থেকে শুধু টানেলের অপারেশনাল কাজে পুলিশ, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ যেসব জরুরি সেবা সংস্থার গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করবে সেগুলোকে টোল দিতে হবে না। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বুধবার টানেলের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিষয়ক নিয়মিত সভায় পুলিশ, নৌবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বন্দর জোনের উপ-কমিশনার শাকিলা সুলতানা বলেন, ‘টানেলের ভেতর দুর্ঘটনাজনিত কারণে পুলিশের কোনও গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করলে সেগুলোর টোল টানেল কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করবে। এ ধরনের একটি সিদ্ধান্তের কথা জেনেছি। তবে এটি কোনও সলিউশন নয়। নগর পুলিশের পক্ষ থেকে ২৩টি গাড়ির টোল ফ্রি চেয়ে সড়ক ও সেতু বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

গত বছরের ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন থেকে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। টানেলের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে নৌবাহিনী। কিন্তু টানেলের অভ্যন্তরে দুর্ঘটনাসহ নানা বিষয়ে আইনগত কাজ করে পুলিশ।

টানেলে পিকআপ ২০০, মাইক্রোবাস ২৫০, বাস (৩১ সিটের কম) ৩০০, বাস (৩২ আসনের বেশি) ৪০০, বাস (৩ অ্যাক্সেল) ৫০০, ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) ৪০০, ট্রাক (৫ দশমিক ০১ থেকে ৮ টন) ৫০০, ট্রাক (৮ দশমিক ০১ থেকে ১১ টন) ৬০০, ট্রাক ও ট্রেইলার (৩ অ্যাক্সেল) ৮০০, ট্রাক ও ট্রেইলার (৪ অ্যাক্সেল) ১ হাজার এবং চার অ্যাক্সেলের বেশি হলে প্রতি অ্যাক্সেলের জন্য ২০০ করে টোল দিতে হচ্ছে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। চার লেন বিশিষ্ট দুটি টিউবের প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার।

২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। পরে বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা দিচ্ছে। বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category