মৌলভীবাজারে শহীদ শাহজাহান এর পরিবারে নেই ঈদের আনন্দ

- আপডেট সময় : ০৪:৫৪:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
- / ১৮৬৬ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সনকাঁপন গ্রামের আরশ আলী ছেলে জুলাই ও আগস্ট গণ অভ্যুহখানে মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র শহীদ শাহজাহান মিয়া পরিবারের সদস্যদের মনে ঈদের আনন্দ নেই। অশ্রু সিক্ত মা-বাবার চোখ। ঈদের আগে ছেলের স্মৃতি বাবা-মাকে তাড়িয়ে বোড়াচ্ছে। ছেলের কথা মনে করে বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন তারা। শুধু ছেলে হত্যার বিচার দেখতে চায় শাহজাহানের পরিবার। ঈদের আনন্দ যেন বিষাদের ছায়া হয়ে নেমেছে পরিবারটিতে। শাহজাহানহীন ঈদের আনন্দ যেন শূন্য হয়ে গেছে তাদের জীবনে। এমন শূণ্যতা দৃশ্য সনকাঁপন গ্রামের সেই ছোট্ট মাটির বাড়িতে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়,মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সনকাঁপন গ্রামের আরশ আলীর গ্রামের বাড়ি । শাহজাহান বসবাস সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ধরাতেপুর এলাকায়।
আরশ আলী মিয়া এর শাহজাহান ছিল বড়। আরশ আলী মিয়া একজন ছোট ব্যবসায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের খবরে বের হওয়া বিজয় মিছিলে যোগ দেন সি এন জি শাহজাহানও। সিলেট দক্ষিণ সুরমা থানার ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকলে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে শাহজাহানসহ আরও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশের গুলিতে নিহত হন শাহজাহান মিয়া। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি শাহজাহান যখন মারা যান তখন তার স্ত্রী ছিলেন অন্ত:সত্তা। মৃত্যুর ৭ দিন পরে একটি কনে সন্তান জন্ম গ্রহন করে। ওই সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারেননি শাহজাহান, সন্তানও কোনোদিন দেখবে না বাবার মুখ। সাথে পরিবারের সদস্যদের ঈদের নামাজ পড়া কিংবা ঈদের দিনে একসাথে খাবার খাওয়া আর হবে না।
নিহত শাহজাহান এর বাবা আরশ আলী মিয়া বলেন, গত ঈদেও পরিবারের ছিল পরিপূর্ণ আনন্দ। কিন্তু এ বছর ছেলে আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে আমাদের ঈদের আনন্দও হারিয়ে গেছে। এবার ঈদে আমার শাজাহান বেঁচে নেই আমরা কিভাবে ঈদ করব। আমার ছেলে সিলেটে থেকে সিএনজি চালাত মাঝেমধ্যে বাড়িতে এসে খরচ দিয়ে যেত। ৫ আগস্টের সরকার পতনের পর সিলেটে আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আমার ছেলে নিহত হয়। আমার ছেলের লাশ এখনো পাওয়া যায়নি। আমরা ভিডিওতে দেখেছি।
সনকাঁপন গ্রামের জাহানারা বেগম জানান, সিলেট ‘সি এন জি চালিয়ে কোনো রকম সংসার চালাত শাহজাহান। প্রতি ঈদে তার মা ও বাবার জন্য কাপড় কিনে আনতো। সেতো এই পৃথিবীতে বেঁচে নেই, সে কিভাবে আনবে। কষ্ট হবে না তাদের ছেলে নেই,কিভাবে ঈদের আনন্দ করবে। পরিবারটা কষ্টে রয়েছে।
সনকাঁপন গ্রামের রেপা বেগম বলেন সিলেটে বসবাস করতেন সেখানে সিএনজি চালাতেন। তার জন্য এলাকায় শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুর রহমান বলেন শাহজাহান মিয়া তার পরিবারের আয়ের উপরে নির্ভর ছিল। বর্তমানে তার পরিবার খুবই অসহায় রয়েছেন। সরকারের কাছে অনুরোধ করবো এই পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য।
নিহত শাহজাহানের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন জাতীয় নাগরিক পাটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব প্রিতম দাশ মুঠেফোনে জানান মৌলভীবাজারে শাহজাহানকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। আমরা জুলাই ফাউন্ডেশনের দায়ীত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করে দিয়েছি তাকে শহীদের মর্যদা দেওয়ার জন্য। আর সিলেটে আমাদের কর্মী বাহিনীকে দায়ীত্ব দেওয়া হয়েছে।