September 21, 2024, 1:04 am

হায়রে শিক্ষা এই হলো তোর দশা……..

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, আগস্ট ১৪, ২০২৪
মানুষ তার কল্পনার সমান বড়।খুবই মজার এবং সত্য একটা বাক্য। আমাদের সমাজের জ্ঞানী গুণী সবাই একথা বলে ছোট দের শিক্ষিত হতে বলে। তারা ধরেই নিয়েছে যে শিক্ষিত হলেই সে সুন্দর কল্পনাশক্তির অধিকারি হবে। কিন্তু আমরা যে শিক্ষা বাবস্থাতে বড় হচ্ছি তা কি আমাদের কল্পনা শক্তি বৃদ্ধি করছে না চিরতরে নাই করে দিচ্ছে তা আমরা দেখছি না বা দেখতে চাচ্ছি না। একটা ছোট্ট শিশু খেলার কিছু না জানলেও তাকে আমরা হরেক রকম খেলনা কিনে দেই কিন্তু যখন সে কিছুটা বড় হয় খেলার সময় হয় তখন আমরা তাকে শিক্ষিত করে তুলার যজ্ঞে অবতীর্ণ হই। হাতের খেলনা ফেলে দিয়ে ধরিয়ে দেই বিশাল বিশাল বই (তাদের তুলনায়) । আর স্কুল এর শিক্ষার অবস্তা আমাদের অজানা নয়।
প্লে-ক্লাস এ যখন কোন ৪ বসর বয়সের কোন শিশু ভর্তি হয় তখন তার মনের(মস্তিষ্কের) অবস্থা না বিবেচনা করে যখন তাকে দৈনিক দু ঘন্টায় তিন বিষয় তিনজন শিক্ষক পড়ান এবং ক্লাস শেষে বাড়ি থেকে কিছু মুখস্ত করে আনার জন্য বলা হয় তখন তাদের মনে শিক্ষার যে চিত্র ফুটে অঠে তা আমরা চিন্তা করলেই বুঝতে পারি। আমরা জানি যে শিশুরা ভাল মুখস্ত করতে পারে তাই তাদের মুখস্তের প্রতিযোগিতায় নামিয়ে দিলে ভবিষ্যতে তাদের কল্পনা শক্তি যে কতটা হয়ে উঠবে তা আমার জানা নেই। মজার ব্যপার হল পিতামাতাও তাদেরকে একই কাজ করতে বলে। তারা তাদের সন্তান এর সাথে অপরের সন্তানের অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। এভাবে শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে একেক জন কে মুখস্ত করার জাহাজ বানিয়ে দেয়া হয়। যার ফলে প্রাথমিক শিক্ষায় অন্য যে দক্ষতা যেমন নতুন কিছু চিনতে পারা, কার্্য-কারন (Reasoning), শুদ্ধ কথা বলতে পারা, প্রশ্ন করতে পারা, চিন্তা করতে পারা, সঠিক ও ভুল চিনতে পারা… এগুলোর প্রাথমিক জ্ঞান তাদের মধ্যে তৈরি হয় না। আর প্রাথমিক শিক্ষার কোন আদর্শ ব্যবস্থা আমরা দেখিনা। আমাদের চারপাশে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য যত্রতত্র কিন্ডার-গার্ডেন স্কুল রয়েছে । তারা কোন পদ্ধতিতে শিক্ষা দান করে তা তারা নিজেরা ঠিক করে। এবং তারা একে অপেরের সাথে প্রতিযোগিতায় নামে। টাকা আয়ের জন্য শিশুদের হরেক রকম বই দেয়। আর শেখানে শিক্ষক হিসেবে থাকে ঝরেপরা বা চাকরীজীবী কিছু মানুষ যারা চায় যে এর মাধ্যমে কিছু বারতি আয় করা যায় কিনা। এ জন্য তারা নিজ বাড়ীতে বা স্কুল এ ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ব্যাচে ব্যাচে প্রাইভেট পড়ায়। এর পরিণতি আমরা অনুমান করতে পারি।
প্রাথমিক শিক্ষার মান বা স্ট্যান্ডার্ড এর বিষয়ে কোন নিরিক্ষা ব্যবস্থা আছে কিনা জানি না। তবে তা থাকা অতি জরুরী। যেমন ক্লাস ওয়ান এ পড়া এক ছাত্রের কি কি দক্ষতা থাকা উচিত কিংবা কি কি বিষয় জানা উচিত তা নির্ধারন করা। তাকে কিভাবে সেই দক্ষতা আর্জন করানো যায় তা ঠিক করা। যেমন ক্লাস টু এর এক ছাত্রের দক্ষতা থাকা উচিত যে সে যেকোনো সংখ্যার যোগ পারবে, গুণ করতে পারবে, সে বাংলা এবং ইংরেজি শব্দের বানান করে পড়তে পারবে …… । এভাবে প্রত্যেক ক্লাস ভিত্তিক বা বয়স ভিত্তিক দক্ষতা গুলো শ্রেণীবদ্ধ করে সে অনুযায়ী বই তৈরী করে তার ব্যবহার সকল প্রাথমিক শিক্ষাদান কারী প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতা মুলক করা উচিত। এ ইংরেজি বা বাংলা মাধ্যম কিংবা উচু স্ট্যান্ডার্ড নিচু স্ট্যান্ডার্ড এগুলো তুলে দিয়ে একটি আদর্শ (ভিন্ন মাধ্যম কোন সমস্যা না) তৈরি করা উচিত।
আরো অনেক কিছু লেখার ছিল কিন্তু আমার লেখার হাত ভাল না বলে বিষয় গুলো ঠিক ভাবে তুলে ধরতে পারছি না। তবে আমার একটা উপলব্ধি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষাতে মান নির্ধারন না করলে, ঠিক শিক্ষা না দিলে, শিশুদের মানুষিক বিকাশ সঠিক না হলে উচ্চ শিক্ষায় যাই করা হক না কেন সঠিক ফল আসবে না।
শাহ মাছুম ফারুকী
লেখক ও কলামিষ্ট

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category