ঢাকা ১১:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মনাকষা সীমান্ত হতে আসামীসহ অবৈধ ভারতীয় মোবাইল আটক। Logo কাঠের তৈরি ব্যতিক্রমী গাড়ি: কুমিল্লার লিটনের সৃষ্টিশীলতার দৃষ্টান্ত Logo শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় ৪ আইনজীবী কারাগারে, পচাঁ ডিম মেরে লাঞ্চিত Logo স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক তরুণীর মৌলভীবাজারে অনশন Logo চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিলো স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন Logo রিজার্ভ বেড়ে পৌনে ২৭ বিলিয়ন ডলার Logo কামালগঞ্জে ইয়াবাসহ ০১ জন আটক Logo দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ জরুরি, ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে হবে: নুরুল হক Logo মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা Logo সিলেট নগরীতে যুবকের ঝুলন্ত লা’শ উদ্ধার

মৌলভীবাজারে পুলিশের খাতায় পলাতক চেয়ারম্যান , অফিসের করছেন বহাল তবিয়তে

মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ১১:৪২:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
  • / ১৮৮০ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ টি মামলার আসামী ও অনিয়ম দুর্নীতির অভিযুক্ত চেয়ারম্যান পুলিশের খাতায় পলাতক রয়েছেন। তবে ইউনিয়ন অফিসের দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বহাল তবিময়তে। সরকারী অফিস আদালতে সভা মিটিং এ রয়েছে তার উপস্থিতি। মৌলভীবাজার সদরের ২ নং মনুর মুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ঝুনু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ টি মামলার আসামী হয়েও ইউনিয়ন অফিসের টিআর প্রকল্পের হয়েছেন সভাপতি। নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ করছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সহ প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সচেতন মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনা। প্রশ্ন উঠছে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। বর্তমানে ইউনিয়নের বরাদ্ধকৃত টি,আর প্রকল্পে তিনি হয়েছেন সভাপতি।

গত মাস খানেক আগে ইউনিয়ন অফিসে একটি চুরির ঘটনা ঘটলে চেয়ারম্যান বাদী হয়ে পিয়নকে দিয়ে মডেল থানায় অভিযোগ পাঠালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলার আসামী চেয়ারম্যান বাদী থাকায় তার অভিযোগ গ্রহন করেননি মৌলভীবাজার থানা পুলিশ। এমদাদুর রহমান ঝুনু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের নিকট ২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেছিলেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ৮ জন ইউপি সদস্য। অভিযোগে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দকৃত সরকারি, আধা-সরকারি (টিআর/কাবিখা) কাজে ১ শতাংশ, অন্যান্য প্রকল্পের কাজ না করে চেয়ারম্যান নিজে মনগড়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। টিসিবির পুরো মালামাল উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণ না করে নিজে বিভিন্ন দোকানে চড়া দামে বিক্রি করেন এবং বাড়িতে নিয়ে যান। ডিপ টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বলে ইউনিয়নের শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে ইউপি সদস্যদের সাথে মনোমালিন্য করে ৩ মাস মাসিক সভা বন্ধ রাখেন। গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ঝুনুর উপর ৪ টি মামলা হয়।

বাজরাকোনা গ্রামের ভূমিহীন জাহিদ উল্ল্যা বলেন, এমদাদ হোসেন ঝুনু অনেক মানুষের নিকট থেকে ডিপ টিবওয়েল দেওয়ার কথা বলে টাকা নিলেও কাউকে ডিপ টিউবওয়েল দেননি। তাকে আশ্রয়ন কেন্দ্রে ঘর দেওয়ার কথা বলে কার্ডের ফটো কপি নিলেও কোন ঘর দেননি। সব কিছু পায় তার দলীয় আওয়ামীলীগের লোকেরা। বর্তমানে তার উপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা থাকার পরও প্রকাশ্যে অফিস করে যাচ্ছেন।

মনুরমুখ ইউনিয়ন অফিসের সচিব সরোফা আক্তার বলেন, চেয়ারম্যান মামলার আসামী কিনা জানিনা। তিনি পদাধিকার বলে টি, আর প্রকল্পের সভাপতি। এছাড়া আমি গিয়াস নগর ইউনিয়নের অতিরিক্ত সচিবের দায়ীত্বে আছি। তাই চেয়ারম্যান অফিসে আসেন কি না বলতে পারবোনা।

মৌলভীবাজার সদরের ২ নং মনুর মুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ঝুনু কে মোবাইলে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মাহবুব বলেন, মনুর মুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ঝুনুর নামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা রয়েছে। তিনি পলাতক রয়েছেন। পুলিশের খাতায় পলাতক থেকে কি ভাবে ইউনিয়ন অফিসের দায়ীত্ব পালন করেন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পুলিশ তাকে পাচ্ছেনা। যদি অফিসে আসেন এসময় অফিসের কেউ এসে খবর দিলে আইনি পদক্ষেপ নেবো।

মৌলভীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তাজ উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান কে গ্রেফতার করবে এটা পুলিশের বিষয়।
চেয়ারম্যান মামলার আসামী হলেও উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষা তাকে বরখাস্থ করা হয়নি। তাই আমার অফিসে আসতে সমস্যা নেই। ইউনিয়ন অফিসের বরাদ্ধ তার মাধ্যমে দিতে হচ্ছে। আর গ্রেফতার করা পুলিশের বিষয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মৌলভীবাজারে পুলিশের খাতায় পলাতক চেয়ারম্যান , অফিসের করছেন বহাল তবিয়তে

আপডেট সময় : ১১:৪২:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

মৌলভীবাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ টি মামলার আসামী ও অনিয়ম দুর্নীতির অভিযুক্ত চেয়ারম্যান পুলিশের খাতায় পলাতক রয়েছেন। তবে ইউনিয়ন অফিসের দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বহাল তবিময়তে। সরকারী অফিস আদালতে সভা মিটিং এ রয়েছে তার উপস্থিতি। মৌলভীবাজার সদরের ২ নং মনুর মুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ঝুনু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ টি মামলার আসামী হয়েও ইউনিয়ন অফিসের টিআর প্রকল্পের হয়েছেন সভাপতি। নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ করছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সহ প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সচেতন মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনা। প্রশ্ন উঠছে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। বর্তমানে ইউনিয়নের বরাদ্ধকৃত টি,আর প্রকল্পে তিনি হয়েছেন সভাপতি।

গত মাস খানেক আগে ইউনিয়ন অফিসে একটি চুরির ঘটনা ঘটলে চেয়ারম্যান বাদী হয়ে পিয়নকে দিয়ে মডেল থানায় অভিযোগ পাঠালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলার আসামী চেয়ারম্যান বাদী থাকায় তার অভিযোগ গ্রহন করেননি মৌলভীবাজার থানা পুলিশ। এমদাদুর রহমান ঝুনু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের নিকট ২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেছিলেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ৮ জন ইউপি সদস্য। অভিযোগে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দকৃত সরকারি, আধা-সরকারি (টিআর/কাবিখা) কাজে ১ শতাংশ, অন্যান্য প্রকল্পের কাজ না করে চেয়ারম্যান নিজে মনগড়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। টিসিবির পুরো মালামাল উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণ না করে নিজে বিভিন্ন দোকানে চড়া দামে বিক্রি করেন এবং বাড়িতে নিয়ে যান। ডিপ টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বলে ইউনিয়নের শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে ইউপি সদস্যদের সাথে মনোমালিন্য করে ৩ মাস মাসিক সভা বন্ধ রাখেন। গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ঝুনুর উপর ৪ টি মামলা হয়।

বাজরাকোনা গ্রামের ভূমিহীন জাহিদ উল্ল্যা বলেন, এমদাদ হোসেন ঝুনু অনেক মানুষের নিকট থেকে ডিপ টিবওয়েল দেওয়ার কথা বলে টাকা নিলেও কাউকে ডিপ টিউবওয়েল দেননি। তাকে আশ্রয়ন কেন্দ্রে ঘর দেওয়ার কথা বলে কার্ডের ফটো কপি নিলেও কোন ঘর দেননি। সব কিছু পায় তার দলীয় আওয়ামীলীগের লোকেরা। বর্তমানে তার উপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা থাকার পরও প্রকাশ্যে অফিস করে যাচ্ছেন।

মনুরমুখ ইউনিয়ন অফিসের সচিব সরোফা আক্তার বলেন, চেয়ারম্যান মামলার আসামী কিনা জানিনা। তিনি পদাধিকার বলে টি, আর প্রকল্পের সভাপতি। এছাড়া আমি গিয়াস নগর ইউনিয়নের অতিরিক্ত সচিবের দায়ীত্বে আছি। তাই চেয়ারম্যান অফিসে আসেন কি না বলতে পারবোনা।

মৌলভীবাজার সদরের ২ নং মনুর মুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ঝুনু কে মোবাইলে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মাহবুব বলেন, মনুর মুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ঝুনুর নামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা রয়েছে। তিনি পলাতক রয়েছেন। পুলিশের খাতায় পলাতক থেকে কি ভাবে ইউনিয়ন অফিসের দায়ীত্ব পালন করেন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পুলিশ তাকে পাচ্ছেনা। যদি অফিসে আসেন এসময় অফিসের কেউ এসে খবর দিলে আইনি পদক্ষেপ নেবো।

মৌলভীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তাজ উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান কে গ্রেফতার করবে এটা পুলিশের বিষয়।
চেয়ারম্যান মামলার আসামী হলেও উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষা তাকে বরখাস্থ করা হয়নি। তাই আমার অফিসে আসতে সমস্যা নেই। ইউনিয়ন অফিসের বরাদ্ধ তার মাধ্যমে দিতে হচ্ছে। আর গ্রেফতার করা পুলিশের বিষয়।