পাকিস্তানে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে সেই প্রত্যাবর্তন ফিরিয়ে আনতে পারেনি তারা চেন্নাইয়ে। লিটন দাস ও সাকিব আল হাসানের পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি সামান্য প্রতিরোধ গড়েছিল। ভারতের শক্তিশালী বোলিং লাইনআপের চাপে ১৪৯ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। চেন্নাই টেস্টে কেবল দুই দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ছড়ি ঘুরিয়েছে। বাকি সময়ে ভারত দেখিয়েছে আধিপত্য। তাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৮ রানের লিড নিয়ে চালকের আসনে তারা। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের পেসার জানালেন, আরও ভালো ব্যাটিং করতে পারতেন ব্যাটাররা।
পাকিস্তানের বাংলাদেশকে ভারতে দেখা গেলো না। তাসকিন বললেন, ‘না, আসলে পাকিস্তান সিরিজে আমরা সব মিলিয়ে ভালো খেলেছিলাম। ব্যাটিং-বোলিং সবকিছুতেই। সে কারণেই আমরা জিততে পেরেছিলাম। আসলে টেসট ক্রিকেটটাই এমন, সেশন বাই সেশন ব্যাটিং বোলিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা এই চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে ভালো করতে পারিনি।’
এসজি বলে খেলাও কঠিন ছিল বললেন তিনি, ‘এসজি বলে খেলা হচ্ছে এখানে। ভারত তাতে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। ছোট থেকে ওরা এই বলে খেলে, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে। আমাদের থেকে ভালো জানে কীভাবে এই বলের ভালো ব্যবহার করতে হয়। আমরা হয়তো প্রথমদিকে একটু সংগ্রাম করেছি। তবুও বলবো যে, আমরা আরও ভালো ব্যাটিং করতে পারতাম। এই ব্যাপারে আমরা সবাই একমত। সব মিলিয়ে নতুন বলে খেলা ছিল চ্যালেঞ্জিং, এই কন্ডিশনে ওদের বোলিং লাইন আপ শক্তিশালী। নতুন বল ভালো খেলতে পারলে এতগুলো উইকেট যেতো না। কারণ মিডল অর্ডার, লোয়ার অর্ডার নতুন বল খেলতে গেলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। সব মিলিয়ে আমরা ব্যাটিংয়ে খারাপ করেছি।’
তবে ইতিবাচক দিকও খুঁজে পাচ্ছেন তাসকিন, ‘ওয়েদার আর কন্ডিশন পেস বোলারদরে জন্য কঠিন, চ্যালেঞ্জিং। বেশ গরম। কিন্তু উইকটে ক্যারি করছে, মুভমেন্ট আছে। ভালো জায়গা বল করতে পারলে, দক্ষতা দেখাতে পারলে সুযোগ তৈরি হয়। আমাদের ফাস্ট বোলার ভালো করেছে, তাদেরও করেছে। একটা জিনিস প্রমাণ হলো যে উইকেটের সহায়তা থাকলে আমাদের ফাস্ট বোলাররা উইকেট নিতে পারে। এটার উন্নতি হয়েছে। দল হিসেব আমরা উন্নতির চেষ্টা করছি। সব মিলিয়ে এখনও উন্নতির জায়গা আছে। এরকম উইকেট থাকলে আমাদেরও ভালো করা সম্ভব।’
ভারত ২০১২ সাল থেকে ঘরের মাঠে টানা টেস্ট সিরিজ জিতছে। নিজেদের মাঠে যে তারা শক্তিশালী, তা মনে করিয়ে দিলেন তাসকিন, ‘ভারত দেশের মাটিতে যে কোনও টিমের জন্য শক্ত প্রতিপক্ষ। হোম অ্যাডভান্টেজ সবাই নিয়ে থাকে। সামনে আমাদেরও হোম সিরিজ আছে, দেখবেন ওখানেও আমরা হয়তো এভাবে ডমিনেট করবো।’
দল যে সামর্থ্য আর সম্ভাবনা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেনি, সেটা স্বীকার করছেন এই পেসার, ‘পাকিস্তানের কন্ডিশন আর প্রতিপক্ষ ভিন্ন ছিল। ওখানে ভালো ব্যাটিং-বোলিং করেছি। গতকাল আমাদের আরও আগে অলআউট করা উচিত ছিল। শেষের দিকে আমরা আপ টু মার্ক বোলিং করতে পারিনি। বিশেষ করে শেষ সেশনে। ওরা ভালো ব্যাটিং করেছিল, আমাদের আরও ভালো করা উচিত ছিল। ৩৫০-তে (হবে ৩৭৬) অলআউট করেছি, আমার মনে হয় আড়াইশতে অলআউট করা উচিত ছিল। তাহলে হয়তো ভিন্ন খেলা হতো। আমরা দল হয়ে স্বীকার করে নিচ্ছি যে, আমাদের সম্ভাবনা অনুযায়ী ভালো করতে পারিনি। এখনও কালকে খেলা আছে, দেখা যাক কী হয়। এক কথায় আমাদের ব্যাটিং ছিল হতাশাজনক।’
Leave a Reply