ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর মধ্যে বড় ধরনের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার পর রবিবার (২৫ আগস্ট) টেলিভিশনে ভাষণ দিয়েছেন হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। তার ভাষণের ৫টি মূল বক্তব্য তুলে ধরেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গত ৭ অক্টোবর গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পরদিন থেকে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। তখন থেকেই আশঙ্কা ছিল-এ যুদ্ধ আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।
বিশেষ করে গত ৩০ জুলাই লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ফুয়াদ শুকর নিহতের পর এই ভয় আরও বেড়ে যায়।
তবে রবিবারের হামলা হিজবুল্লাহর একটি বৃহৎ আকারের ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া এড়াতে ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
কারণ হাসান নাসরাল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েলি সামরিকও গোয়েন্দা স্থাপনায় তাদের হামলা সফল হয়েছে। হামলার প্রথম পর্যায় সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ফলে হিজবুল্লাহর এই হামলা ইসরায়েলকে লেবানন আক্রমণে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। আবার এই হামলা ইসরায়েলকে পিছিয়ে রাখার এবং রেড লাইন অতিক্রম থেকে বিরত রাখার ইঙ্গিতও হতে পারে বলে জানিয়েছেন আল জাজিরার রিপোর্টার জেইনা খোদর।
হামলার নিশানা ছিল গোয়েন্দা স্থাপনা
হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, তাদের আক্রমণের প্রধান কেন্দ্র ছিল তেল আবিবের উত্তরের গ্লিলট ঘাঁটি। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের আবাসস্থল এটি। এখানে হামলার কারণ হিসেবে নাসরাল্লাহ বলেছেন, হিজবুল্লাহ কমান্ডারদের হত্যার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করেছেন তারা।
তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, হিজবুল্লাহর ছোড়া রকেট ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় শহর তেল আবিবই নয়, অধিকৃত গোলান মালভূমিতে আঘাত হেনেছে। যদিও ইসরায়েল বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর হামলাকে ব্যর্থ করেছে।
তবে নাসারাল্লাহর দাবি, ইসরায়েল সরকার গ্লিলটের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য গোপন রাখছে।
গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার কারণে হামলা বিলম্বিত হয়েছে
হিজবুল্লাহ প্রধান স্বীকার করেছেন, তারা আরও আগেই ইসরায়েলে হামলা চালাতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা সফল হওয়ার জন্য সময় দেওয়ার কারণেও হামলায় বিলম্ব হয়েছে।
কারণ হিসেবে নাসারাল্লাহ উল্লেখ করেছেন, আমাদের লক্ষ্য গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করা। তাই সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু এখন এটা স্পষ্ট যে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নতুন নতুন শর্ত আরোপ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র তার সঙ্গে কাজ করছেন। যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে এখন শুধুই সময়ের অপচয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।
কথা ও আখ্যানের যুদ্ধ
হামলা নিয়ে ইসরায়েলের দাবি খণ্ডন করতেও ভাষণ দিয়েছেন নাসারাল্লাহ। কারণ ইসরায়েল ইঙ্গিত দিয়েছে, হিজবুল্লাহর হামলা সম্পর্কে তারা আগেই জানতে পেরেছে।তাই আগেভাগেই হিজবুল্লাহকে নিশানা করে হামলা চালিয়েছে। বিশেষ করে হিজবুল্লাহ কমান্ডারদের হত্যাকাণ্ডের পর লেবানিজ গোষ্ঠীটির গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসের বিষয়টি উঠে আসে।
তবে হিজবুল্লাহ প্রধান বলেছেন,হামলা সম্পর্কে আগেভাগেই কোনও তথ্য পায়নি ইসরায়েলিরা। তারা কেবল সীমান্তে হিজবুল্লাহর গতিবিধি লক্ষ্য করেছে।তার দাবি, ইসরায়েল হিজবুল্লাহগর যেসব স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, সেগুলো আগেই খালি করা হয়েছিল।
ইসরায়েল বর্ণনা করেছে, তারা লেবানন থেকে আসা হাজার হাজার রকেট হামলাকে প্রতিরোধ করেছে। কিন্তু সত্যি কথা হল হিজবুল্লাহ কেবল ৩০০ রকেট দিয়ে হামলা চালিয়েছিল।
বেসামরিক স্থাপনা এড়ানো হয়েছে
নাসরাল্লাহ স্বীকার করেছেন, শুকর হত্যার পর থেকে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধের সম্ভাবনায় লেবাননে ভয়ের অনুভূতি ছড়িয়ে পড়েছে। তাই হিজবুল্লাহ লেবাননে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং শত্রুদের কাছ থেকে তাদের প্রতি কোন আঘাত এড়ানোর চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছন নাসারাল্লাহ।
Z News Tv,991/2 west kazipara, mirpur 10, 1216 Dhaka,Bangladesh.
Email: znewstv.bd@gmail.com Mobile: 01908688552