শেখ ফরিদ স্টাফ রিপোটার
বগুড়ার নন্দীগ্রামে ইসলামী জালসাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়ানক সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে। এমনকি সংঘর্ষে জড়ালে একাধিক প্রানহানীর ঘটনাও ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ সহ সংঘর্ষ এড়াতে থানা পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। ঘটনাটি উপজেলার ৫নং ইউনিয়নের কৃঞ্চপুর (বটবৃক্ষ) গ্রামে। মূলত মসজিদ ও মক্তবের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। ইতিমধ্যে গ্রামটিতে নব-গঠিত মসজিদ কমিটি আয়োজিত ইসলামী জালসার বিপক্ষে বিবাদী পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান গ্রহনের কারনে সংঘর্ষের আশংকায় জালসার অনুষ্ঠান দুই দুইবার বন্ধ করেছিলেন থানা পুলিশ। এবার বিবাদীপক্ষ নিজেরাই গ্রামটিতে আগামী ১৫ই জানুয়ারী ইসলামী জালসার ঘোষনা দেন। এতে মসজিদ কমিটি সহ গ্রামবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃঞ্চপুর (বটবৃক্ষ) গ্রামের মসজিদ কমিটির সভাপতি সেচ্ছায় অব্যহতি নেওয়ায় এবং মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন কমিটি গঠন করেন গ্রামবাসী। সেখানে গ্রামবাসী সর্বসম্মতিক্রমে অর্থ আত্মসাত ও বিভিন্ন অভিযোগে দুই জন ব্যক্তিকে বাদ রেখে কমিটি ঘোষনা দেন। এতেই ঘটে বিপত্তি। কমিটিতে বাদ পরা দুই ব্যক্তি এবং তাদের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় অপমান বোধ থেকে গ্রামবাসীকে দুই ভাগে বিভক্ত করেন বিবাদীপক্ষ। এমতাবস্থায়, প্রতি বছরের ন্যায় গত ২৬শে ডিসেম্বর গ্রামটিতে (১৯তম) ইসলামী জালসার আয়োজন করেন নব-গঠিত কমিটি সহ গ্রামবাসী। অপরদিকে বিবাদীপক্ষ নব-গঠিত কমিটি অবৈধ দাবী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং নব-গঠিত কমিটি আয়োজিত ইসলামী জালসাকে কেন্দ্র করে গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জানান দেন। এই ঘটনায় থানা পুলিশ নব-গঠিত কমিটি সহ গ্রামবাসীকে থানায় ডেকে ২৬শে ডিসেম্বর ইসলামী জালসার আয়োজন বন্ধের নির্দেশ দেন। সেই সাথে সংসদ নির্বাচনের পর সুষ্ট পরিবেশে গ্রামটিতে ইসলামী জালসা আয়োজনের আহ্বান জানান। পরে নির্বাচন শেষ হলে আসনের নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য রেজাউল করিম তানসেন (এমপি) কে প্রধান অতিথী করে গত ১২ই জানুয়ারী গ্রামটিতে পুনরায় ইসলামী জালসার আয়োজন করেন গ্রামের নব-গঠিত মসজিদ কমিটি সহ গ্রামবাসী। অপরদিকে, বিবাদীপক্ষ গ্রামের ইসলামী জালসার আয়োজন পন্ড করতে পুনরায় মুখো মুখি অবস্থান নেন এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে সংঘর্ষ বাধাতে একই দিনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা কে প্রধান অতিথী করে ইসলামী জালসার ঘোষনা দেন। বিষয়টি থানা পুলিশের নজরে আসলে মুখোমুখি সংঘর্ষের আশংকায় পুনরায় দুই পক্ষকে থানায় ডেকে আবারও ইসলামী জালসা বন্ধের নির্দেশ দেন। সেই সাথে গ্রামবাসীর মধ্যে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত গ্রামের কোন পক্ষ গ্রামটিতে ইসলামী জালসা করতে পারবেনা বলে নির্দেশ দেন। এদিকে নির্দেশনা অমান্য করে পুনরায় ১৫ই জানুয়ারী বিবাদীপক্ষের আয়োজনে ইসলামী জালসার ঘোষনার পর সাধারন গ্রামবাসীর মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। সেই সাথে ১৫ই জানুয়ারী ইসলামী জলসাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়ানক সংঘর্ষের আশংকা প্রকাশ করেছে সাধারন গ্রামবাসী।
উক্ত বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজমগীর হোসাইনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, গ্রামবাসীর মধ্যে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত গ্রামটিতে ইসলামী জালসার আয়োজন বন্ধ থাকবে বলে উভয় পক্ষকেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করে যদি কোন পক্ষ গ্রামটিতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দেয় তাহলে জন-নিরাপত্তার তাগিদে থানা পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করবে।
Leave a Reply