জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
নেত্রকোনা শহরে বৃদ্ধাকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে হত্যার অভিযোগে নাতি সিনহাকে (১৬) আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) ভোরে শহরের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে সিনহাকে আটক করে পুলিশ।
এরআগে, সোমবার রাত সোয়া ১১টার দিকে শহরের নিউটাউন বিলপাড় এলাকায় নিজের তালাবদ্ধ ঘর থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় বৃদ্ধ জোছনা বেগমের (৮০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জোছনা বেগম শহরের নিউটাউন বিলপাড় এলাকার মৃত আবুল মুন্সীর স্ত্রী। আর আটক সিনহা জোছনা বেগমের বড় ছেলে মিল্টন মোল্লার ছেলে।
নেত্রকোনা জেলা পুলিশের মুখাপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) লুৎফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পরিবারের লোকজন জানিয়েছে- সিনহা মাদকাসক্ত। কয়েক মাস আগে পরিবারের অমতে বিয়েও করেছে। পরে নানার বাড়ি আটপাড়ায় গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে উঠে। রোববার রাতে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিতে দাদী জোছনাকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ঘরের মেজেতে ফেলে রেখে যায় সিনহা।
পুলিশ ও জোছসা বেগমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জোছনা বেগমের দুই ছেলে এলাকায় থাকেন না। নিউটাউন বিলপাড়ের বাসায় বসবাস করতেন জোছনা বেগম। বড় ছেলে মিল্টন মোল্লার ছেলে সিনহা নবম শ্রেণিতে পড়ে। সিনহা বখাটে ও মাদকাসক্ত। এ অবস্থায় কয়েকমাস আগে পরিবারের অমতে বিয়ে করেছে। পরে নানার বাড়ি আটপাড়াতে স্ত্রীকে নিয়ে উঠেছে। এদিকে দাদী জোছনাকে নেশার টাকার জন্য প্রায়ই বিরক্ত করত সিনহা। পরে রোববার রাতে ঘরে ঢুকে জোছনার হাত-পা ও মুখ বেঁধে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে ঘরের আলমিরাতে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় সিনহা। আর ঘরের বাইরে তালা লাগিয়ে দেয়। আশপাশের লোকজন মনে করেছিল ঘর তালা দিয়ে জোছনা হয়তো বাইরে কোথায়ও গিয়েছেন।
গতকাল সোমবার ছেলে মিল্টন সারাদিন বারবার ফোনকল করেও মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারছিলেন না। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর মামা ফেরদৌস দরজার তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে জোছনার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় ঘরের ভেতরে জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় ও স্টিলের আলমীরা খোলা ছিল। পরে খবর পেয়ে রাতেই লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জেলা পুলিশের মুখাপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) লুৎফুর রহমান বলেন, আটকের পর সিনহা এ ঘটনায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। টাকা ও স্বর্ণালংকার নেওয়ার উদ্দেশ্যই এ কাজ করেছে সিনহা। হত্যা করা হয়তো তার উদ্দেশ্য ছিল না। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এদিকে লাশ উদ্ধার করে ময়না জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply